শৈবাল কাকে বলে ? শৈবালের বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণীবিভাগ

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজকের এই পর্বে আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম শৈবাল কাকে বলে এবং শৈবালের বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ সম্পর্কে।

শৈবাল কাকে বলে :

 ক্লোরোফিলযুক্ত আদি নিউক্লিয়াস বা আদর্শ নিউক্লিয়াসযুক্ত, স্বভোজী পুষ্টিসম্পন্নকারী, সমাঙ্গদেহী সরল প্রকৃতির উদ্ভিদদের বলা হয় শৈবাল বলে।

শৈবালের প্রধান বৈশিষ্ট্য :

i. শৈবাল ক্লোরোফিলযুক্ত স্বভোজী ও সমাঙ্গদেহী উদ্ভিদ।

ii. শৈবাল সাধারণত এককোশী, বহুকোশী, প্রোক্যারিওটিক ও ইউক্যারিওটিক প্রকৃতির হয়।

iii. শৈবালের কোশপ্রাচীর দুই স্তরীয় এবং মুখ্যত সেলুলোজ ও পেকটিন দ্বারা গঠিত।

iv. শৈবালের কোশে অবস্থিত ক্লোরোপ্লাস্ট ডিম্বাকার, ফিতাকৃতি, পেয়ালাকার, তারকাময় ও প্যাঁচানো আকৃতিবিশিষ্ট হয়।

v. শৈবালের ক্লোরোপ্লাস্টে থাকে পাইরিনয়েড দানা।

যেমন : স্পাইরোগাইরা, ভলভক্স, ক্ল্যামাইডোমোনাস, কারা, ফিউকাস।

পড়ুন : প্রবাল প্রাচীর কাকে বলে ?

শৈবালের সাধারণ বৈশিষ্ট্য :

১. উদ্ভিদজগতে স্থান : শৈবাল থ্যালোফাইটা বা সমাঙ্গদেহী বিভাগের অন্তর্গত ক্লোরোফিলযুক্ত স্বভোজী উদ্ভিদ।

২. বাসস্থান : শৈবাল সাধারণত জলজ উদ্ভিদ। তবে এদের অর্ধজলজ ও স্থলজ হিসেবেও জন্মাতে দেখা যায়। শৈবাল বিভিন্ন সময় মিথোজীবীরূপে ছত্রাকের সঙ্গে সহাবস্থান করে। উদাহরণ- লাইকেন

৩. দেহগঠন : শৈবাল এককোশী, বহুকোশী, শাখাহীন বা শাখান্বিত সূত্রাকার হয়। কোনো কোনো শৈবাল ফাঁপা নলের মতো আকৃতি বিশিষ্ট বা উপনিবেশ গঠনকারী হয়। একসারি শৈবাল কোশকে ট্রাইকোম বা রুহ বলে। ট্রাইকোম যখন পিচ্ছিল পদার্থের আবরণে আবৃত থাকে তখন তাকে বলা হয় অণুসূত্র বা ফিলামেন্ট। এককোশী শৈবালরা অনেকক্ষেত্রে ফ্ল্যাজেলাবিশিষ্ট হয়।

৪. কোশের ধরন : শৈবালের কোশ প্রো ক্যারিওটিক বা ইউ ক্যারিওটিক প্রকৃতির হয়। কোশে কোশপ্রাচীর থাকে। কোশের সাইটোপ্লাজমে আদর্শ নিউক্লিয়াসসহ বিভিন্নরকম কোশ অঙ্গাণু থাকে।

৫. কোশপ্রাচীর : শৈবালের কোশ মূলত দুই স্তরীয় কোশপ্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত থাকে। কয়েকটি ফ্ল্যাজেলাযুক্ত শৈবালের কোশে কোশপ্রাচীর থাকে না। এদের কোশে পেরিপ্লাস্ট নামক একটি দৃঢ় আবরণ থাকে। শৈবালের কোশপ্রাচীরে সাধারণত সেলুলোজ, পেকটিন ও মিউসিলেজ জাতীয় কার্বোহাইড্রেট থাকে। কোশপ্রাচীরে বিভিন্ন  সময় প্রোটিন জমতে দেখা যায়।

৬. রঞ্জক কণা : শৈবালের কোশে অবস্থানরত প্রধান রঞ্জক কণা হল সবুজ বর্ণের ক্লোরোফিল। ক্লোরোফিল ছাড়াও বাদামি, নীল, লাল, বাদামি-হলুদ প্রভৃতি রঞ্জক কণাও উপস্থিত থাকে। রঞ্জক প্লাস্টিডের ভিতরে অবস্থান করে। তবে প্রোক্যারিওটিক শৈবালদের ক্ষেত্রে রঞ্জক সাইটোপ্লাজমে থাকে। শৈবাল কোশে প্লাস্টিডের মধ্যে পাইরিনয়েড দানা থাকে যা প্রকৃতপক্ষে শ্বেতসার পরিবৃত প্রোটিন দানাবিশেষ।

৭. ক্লোরোপ্লাস্টিড : শৈবালের কোশের ক্লোরোপ্লাস্টিডের আকার হয় গোলাকার, ডিম্বাকার, উপবৃত্তাকার, তারকাকার, জালকাকার, ফিতাকৃতি ও চাকতির মতো হয়।

৮. গচ্ছিত খাদ্য : শৈবালের কোশে গচ্ছিত প্রধান খাদ্যবস্তু হল কার্বোহাইড্রেট। এ ছাড়া থাকে স্নেহপদার্থ, লিউকোসিন, প্যারামাইলাম প্রভৃতি পদার্থ সঞ্চিত খাদ্যরূপে অবস্থান করে। শৈবালে কার্বোহাইড্রেট বিভিন্ন প্রকারের হয়, যেমন- সবুজ শৈবালে শ্বেতসার, বাদামি শৈবালে ম্যানিটল ও ল্যামিনারিন, সোনালি ও বাদামি শৈবালে ডায়াটমিন, নীলাভ সবুজ শৈবালে সায়ানোফাইসিয়ান শ্বেতসার প্রভৃতি।

৯. জনন ক্ষমতা : শৈবালের জনন অঙ্গজ, অযৌন ও যৌন জনন পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। এদের অঙ্গজ জনন খণ্ডীভবন পদ্ধতিতে ঘটে। এদের অযৌন জনন রেণুর সাহায্যে ঘটে। এদের যৌন জনন তিন রকমের যথা-অ্যানাইসোেগ্যামি, আইসোেগ্যামি ও উগ্যামি প্রকৃতির হয়। এদের সংযুক্তি পদ্ধতিতেও যৌন জনন সম্পন্ন হয়।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব শৈবালের :

১. খাদ্যরূপে ব্যবহার : অতি প্রাচীনকাল ধরে শৈবাল মানুষের খাদ্যরূপে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চিনে গ্রাসিলেরিয়া ও ল্যামিনেরিয়া, জাপানে পরফাইরা, স্কটল্যান্ডে উলভা খাদ্য হিসেবে প্রচলিত। বর্তমান সময়ে ক্লোরেল্লা থেকে ভিটামিন প্রস্তুতি এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত করা হচ্ছে।

২. ওষুধ তৈরির কাজ : ক্লোরেল্লা থেকে ক্লোরেলিন নামক জীবাণুপ্রতিরোধী ওষুধ তৈরি করা হয়। ল্যামিনেরিয়া ও সারগাসাম থেকে গলগণ্ড রোগের ওষুধ প্রস্তুত করা হয়।

৩. শিল্পকার্যে ব্যবহার : সমুদ্র শৈবাল থেকে যে “কেল্প” পাওয়া যায় তা কাচ ও সাবান শিল্পে ব্যবহার করা হয়। বাদামি শৈবাল থেকে আলজিন এবং লোহিত শৈবাল থেকে যে জিলাটিন উৎপন্ন হয় তা জেলি, আইসক্রিম ও প্রসাধন শিল্পে ব্যবহার করা হয়। কেল্প থেকে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন, সোডা, পটাশ এবং অ্যালজিনিক অ্যাসিড পাওয়া যায়।

৪. পেট্রোলিয়াম শক্তি উৎপাদন : সামুদ্রিক শৈবাল থেকে প্রচুর  পরিমাণে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায়।

৫. আবর্জনা পরিষ্কারে ব্যবহার : নালা নর্দমার আবর্জনা শোধনে শৈবাল ব্যবহার করা হয়।

৬. সার হিসেবে ব্যবহার : নীলাভ সবুজ শৈবাল অ্যানাবিনা, নস্টক, অসিলেটোরিয়া জমির নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। অনেক সামুদ্রিক শৈবাল পটাশিয়ামের চাহিদা পূরণ করে।

৭. মহাকাশ গবেষণায় ব্যবহার : ক্লোরেল্লা মহাকাশযানে সংরক্ষণ করে রাখা হয় যা মহাকাশযানে অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করে।

৮. মাছ উৎপাদন : মাছ উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন শৈবালকে মাছের খাদ্যরূপে ব্যবহার করা হয়।

পড়ুন : ব্যাকটেরিয়া কাকে বলে ?

৯. ডায়াটমীয় মাটি : সমুদ্রে জলের নীচে ডায়াটম শৈবালের মৃতদেহ দীর্ঘদিন ধরে ক্রমাগত জমা হয়ে একপ্রকার শক্ত মৃত্তিকা গঠন করে একে ডায়াটমীয় মৃত্তিকা বলে। এটি ব্লাস্ট ফার্নেসের তাপ নিরোধক আস্তরণ, বিস্ফোরক পদার্থ, ফিলটার প্রভৃতি তৈরিতে কাজে লাগে।

১০. পশুখাদ্যের জন্য ব্যবহার : সারগাসাম, ল্যামিনেরিয়া, ফিউকাস প্রভৃতি সামুদ্রিক শৈবাল গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে এবং পোলট্রিতে হাঁস, মুরগি প্রভৃতির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়।

শৈবালের শ্রেণিবিভাগ :

বহুকোশী শৈবালদের তিনটি মুখ্য বিভাগ হল-লাল শৈবাল, বাদামি শৈবাল এবং সবুজ শৈবাল।

A. লাল শৈবাল কাকে বলে : রোডোফাইটা বিভাগের অন্তর্গত শৈবালদের লাল শৈবাল বলে। কারণ এদের দেহে বিশেষ রঞ্জক ফাইকোএরিথ্রিন থাকে।

লাল শৈবালের বৈশিষ্ট্য :

i. লাল শৈবাল হল সবচেয়ে প্রাচীন শৈবাল, জীবিত প্রজাতির সংখ্যা প্রায় 5000।

ii. এরা সাধারণত সামুদ্রিক। Batrachospermum sp. একমাত্র স্বাদুজলে বসবাস করে।

iii. লাল শৈবাল হল মূলত স্বভোজী। কয়েকটি প্রজাতি পরজীবী।

iv. লাল শৈবালের জীবন চক্রে সচল ফ্ল্যাজেলাযুক্ত দশা থাকে না।

v. উদ্ভিদ দেহ এককোশী, সূত্রাকার, ফিতাকৃতি, প্যারেনকাইমাটাস, সিউডোপ্যারেনকাইমাটাস, বহুকোশী প্রকারের হয়।

vi. লাল শৈবাল কোশপ্রাচীর সেলুলোজ, পেকটিক পদার্থ ও মিউকোপলিস্যাকারাইড দ্বারা গঠিত।

vii. লাল শৈবালের দেহকোশে সালোকসংশ্লেষীয় অঙ্গাণু ক্রোমাটোফোর থাকে।

viii. দেহকোশে সালোকসংশ্লেষীয় রঞ্জক ক্লোরোফিল, ক্যারোটিনয়েড, ফাইকোবিলিন থাকে।

ix. কোশের সঞ্চিত খাদ্য হল ফ্লোরিডিয়ান শ্বেতসার যা গ্লাইকোজেন সদৃশ।

x. অযৌন জনন সম্পন্ন হয় রেণুর সাহায্যে, রেণু বিভিন্ন প্রকারের, যেমন- নিউট্রাল স্পোর, মনোস্পোর, টেট্রাস্পোর, কারপোস্পোর, গেমি ইত্যাদি।

লাল শৈবালের অর্থকারী গুরুত্ব :

i. খাদ্য : কতগুলি লাল শৈবাল খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ- Porphyra, Rhodymenia, Chondrus

ii. বিভিন্ন ঔষধ তৈরি : Corallina কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। Polysiphonia অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। Agar মল নিষ্কাশনের জন্য এবং Carageenin রক্ত তঞ্চনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

iii. ব্রোমিন : লাল শৈবাল Rhodomela ও Polysiphonia থেকে ব্রোমিন পাওয়া যায়।

কয়েকটি পরিচিত লাল শৈবাল :

১. জেলিডিয়াম : জেলডিয়ান একরকমের শাখান্বিত আগার উৎপাদনকারী লাল শৈবাল। এরা সমুদ্রের তলদেশে কোনো বস্তুর ওপর রাইজয়েডের সাহায্যে আটকে থাকে। এদের কোশপ্রাচীর থেকে আগার উৎপন্ন হয়। জাপানে ১৭৬০ সাল থেকে এই প্রজাতি থেকে আগার উৎপাদন করা হচ্ছে।

২. পরফাইরা : পরফাইরা একটি খাদ্যযোগ্য চ্যাপ্টা থ্যালাস আকৃতির সামুদ্রিক লাল শৈবাল। এদের নিউট্রাল স্পোরের সাহায্যে অযৌন জনন সম্পন্ন হয়। যৌন জননের প্রভাবে যে ডিপ্লয়েড জাইগোট উৎপন্ন হয় তা মিয়োসিস পদ্ধতিতে হ্যাপ্লয়েড কারপোম্পোর উৎপন্ন করে। এই রেণু অঙ্কুরিত হয়ে অপত্য পরফাইয়া সৃষ্টি করে।

৩. ব্যাট্রাকোম্পারমাম : এটি হল একমাত্র সুস্বাদু জলের রেড শৈবাল। এদের ফ্রগ স্পন শৈবাল বলে। এদের অঙ্গজদেহ সূত্রাকার এবং শাখান্বিত। এই ধরনের শৈবাল অযৌন জনন সম্পন্ন করে মনোম্পোর এর সাহায্যে। এদের পুজেনন অঙ্গাকে স্পার্মট্যিাঞ্জিয়া এবং স্ত্রী জনন অঙ্গ্যকে কারপোগোনিয়া বলে। কারপোস্পোর অঙ্গুরিত হয়ে অপত্য শৈবাল সৃষ্টি করে।

৪. গ্রাসিলেরিয়া : এটি একটি আগার উৎপাদনকারী লাল শৈবাল। থ্যালাস শাখান্বিত, তরুণাস্থিময়, বেলনাকার।

৫. পলিসাইফোনিয়া : এই লাল শৈবালগুলি ক্ষুদ্র ঝোপের মতো। কোন জলজ বস্তুর সঙ্গে রাইজয়েড দিয়ে আটকে থাকে। এদের দুই রকমের শাখা থাকে, যেমন- খর্ব শাখা ও দীর্ঘ শাখা। খর্ব শাখায় অ্যানথেরিডিয়া ও কারপোগানিয়া ধারণ করে। নিষেকের ফলে সিস্টোকার্পের সৃষ্টি হয়। কারপোকার্প থেকে ৪টি ডিপ্লয়েড কারপোস্পোর গঠিত হয়। প্রতিটি কারপোস্পোর থেকে গ্যামেটোফাইটিক উদ্ভিদ দেহ সৃষ্টি হয়। পলিসাইফোনিয়া থেকে ব্রোমিন উৎপাদিত হয়।

B. বাদামি শৈবাল কাকে বলে :

ফিওফাইট বিভাগের অন্তর্গত শৈবালদের বাদামি শৈবাল বলে। এদের দেহে বাদামি বর্ণের রঞ্জক ফিউকোজ্যানথিন থাকে। অ্যাটলানটিক সমুদ্রে এদের উপস্থিতি লক্ষণীয়।

বাদামি শৈবালের বৈশিষ্ট্য :

i. বাদামি শৈবালের প্রজাতি সংখ্যা আনুমানিক 2000।

ii. প্রায় বেশিরভাগ বাদামি শৈবাল সামুদ্রিক।

iii. বাদামি শৈবাল এককোশী হয় না।

iv. নিম্নগামী শৈবালরা শাখান্বিত সূত্রাকার গঠনযুক্ত এবং উচ্চশ্রেণির শৈবালরা প্যারেনকাইমাটস গঠনযুক্ত হয়।

v. সবচেয়ে বৃহৎ বাদামি শৈবালদের কেল্প বলে।

vi. বৃহৎ বাদামি শৈবালদের শরীরে বায়ু গহ্বর বা ব্লাডার থাকে।

vii. কোশপ্রাচীরে সেলুলোেজ, নন্নুকান স্যাকারাইড এবং ফাইকোকোলয়েড থাকে।

viii. বাদামি শৈবালের দেহ ফাইকোকোলয়েড অ্যালজিনিক অ্যাসিড, ফিউকয়ডিন এবং ফিউসিন নিয়ে গঠিত।

ix. সালোকসংশ্লেষীয় অঙ্গাণু ক্রোমাটোফোর তিনটি ফাইলাকয়েড ল্যামেলি নিয়ে গঠিত।

কয়েকটি পরিচিত বাদামি শৈবাল :

১. ল্যামিনারিয়া : এরা একপ্রকার বৃহদাকার কেল্প। এদের ডেভিল অ্যাপ্রোন বলে। এরা দৈর্ঘ্যে ১-৩ মিটার হয়। শরীরের পাদদেশ বা হোল্ডফাস্ট, কান্ডসদৃশ স্টাইপ এবং পত্রসদৃশ ল্যামিনা নিয়ে বিভক্ত। ল্যামিনারিয়া খাদ্য, সার, অ্যালজিন এবং আয়োডিনের উৎস।

২. ফিউকাস : ফিউকাস ক্ষুদ্রাকৃতি, চর্মবৎ, চ্যাপ্টা, শাখান্বিত, পেরিনিয়াল বাদামি শৈবাল। শাখাগুলিতে ফ্লাস্ক আকারের গহ্বর কনসেপট্যাকল গঠিত হয়। গ্যামেট তৈরির সময় মিয়োসিস বিভাজন ঘটে।

৩. সারগাসাম : এরা গাল্ফ উইড নামে পরিচিত। এরা সার ও গবাদি পশুর খাদ্যশস্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সারগাসাম থেকে প্রাপ্ত সারগানিন অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাংগাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যৌনাঙ্গ দুটি ভিন্ন কনসেপট্যাকল এর মধ্যে জন্মায়।

৪. এক্টোকারপাস : এদের দেহ সূত্রাকার প্রচুর শাখাযুক্ত। এদের দেহটি উল্লম্ব ও শায়িত অংশে বিভক্ত। শায়িত অংশ থেকে অধিক শাখাযুক্ত রাইজয়েড নির্গত হয়। প্রতিটি ফিলামেন্ট এক সারি কোশ দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কোশ হয় আয়তাকার। কোশপ্রাচীর সেলুলোজ দিয়ে গঠিত।

C. বিভাগ ক্লোরোফাইটা :

সব প্রকারের সবুজ শৈবাল এই বিভাগের অন্তর্গত। স্থলজ উদ্ভিদের মতো এদের কোশপ্রাচীর সেলুলোজ দ্বারা গঠিত। সঞ্চিত খাদ্য হিসেবে শ্বেতসার উপস্থিত। সালোকসংশ্লেষীয় রঞ্জক হিসেবে ক্লোরোফিল-a ও ক্লোরোফিল-b বিদ্যমান।

সবুজ শৈবালের বৈশিষ্ট্য :

i. সবুজ শৈবালের জীবিত প্রজাতির সংখ্যা আনুমানিক 7000।

ii. এদের কোশপ্রাচীরে সেলুলোজ উপস্থিত।

iii. এদের ক্লোরোপ্লাস্টে ২ থেকে ২০টি থাইলাকয়েড ল্যামেলি থাকে।

iv. ফ্লাজেলাযুক্ত শৈবালদের ক্লোরোপ্লাস্টের মধ্যে চক্ষু বিন্দু বা স্টিগমা উপস্থিত।

v. অযৌন জনন জুস্পোর, অ্যাকাইনেট, অটোস্পোরের সাহায্যে সম্পন্ন হয়। যৌন জনন আইসোগ্যামি, অ্যানাইসোগ্যামি ও উগ্যামি প্রকৃতির।

Leave a Comment