মেকলে মিনিট কি :
ভূমিকা : ভারতবর্ষের কিছুটা অঞ্চলে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রচলন হওয়ার পর এদেশে একটি সুনির্দিষ্ট শিক্ষার প্রসার করা বিশেষ প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
● প্রেক্ষাপট : ব্রিটিশ কোম্পানি ভারতে প্রাচ্য শিক্ষা না আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নেবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার পূর্বে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। একদল পণ্ডিত এদেশে প্রাচ্য শিক্ষার প্রবর্তনের কথা বললেও অপর দল এদেশে ইংরেজি ও আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের দাবি জানান।
● মেকলের প্রস্তাব : বড়োেলাট লর্ড বেন্টিঙ্কের আমলে ( 1828 – 35 খ্রি . ) জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উগ্র পাশ্চাত্যবাদী টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে 1835 সালে 2 ফেব্রুয়ারি বড়োলাট লর্ড বেন্টিঙ্কের কাছে একটি প্রস্তাব দেন যা ‘ মেকলে মিনিট ‘ নামে পরিচিত।
● মেকলের মিনিটের বক্তব্য :
মেকলে তাঁর ‘ মিনিট ’ বা প্রস্তাবে বলেন যে-
i. প্রাচ্যের শিক্ষা বৈজ্ঞানিক চেতনাহীন এবং পাশ্চাত্যের তুলনায় সম্পূর্ণ নিকৃষ্ট।
ii. প্রাচ্যের সভ্যতা দুর্নীতিগ্রস্ত ও অপবিত্র। তাই এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তিত হওয়া দরকার।
iii. এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটলে ক্রমনিম্ন পরিসুত নীতি বা ‘ চুঁইয়ে পড়া নীতি ’ অনুসারে তা ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
iv. পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ফলে এদেশে এমন একটি সম্প্রদায়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে যারা ‘ রক্তে ও বর্ণে ভারতীয় হলেও রুচি , মত , নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় হবে ইংরেজ।
মূল্যায়ন : ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের প্রেক্ষাপটে ‘মেকলে মিনিট ’ ছিল অধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব। শেষপর্যন্ত মেকলে মিনিটের সুপারিশ মান্য করেই বড়োেলাট লর্ড বেন্টিঙ্ক ভারতবর্ষে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারকে সরকারের শিক্ষানীতি হিসেবে জারি করেন।
আরও পড়ুন : |