রশিদ আলির মুক্তির দাবিতে 1946 খ্রিস্টাব্দের 11 ফেব্রুয়ারি মুসলিম ছাত্র লিগ কলকাতায় ছাত্র ধর্মঘট করে। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলিও এই ধর্মঘটে শামিল হয়। ছাত্ররা 12 ফেব্রুয়ারি দিনটি রশিদ আলি দিবস পালন করার কথা ঘোষণা করে।
রশিদ আলি দিবস :
ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সংগ্রাম আত্মত্যাগের যে সুমহান আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে তার দৃষ্টান্ত বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।
1. আজাদ হিন্দ বাহিনীর অভিযান : জাপানি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আজাদ হিন্দ বাহিনী 1944 খ্রিস্টাব্দের প্রথমদিকে ব্রহ্মদেশের সীমান্ত দিয়ে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।
2. পরাজয় : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান শীঘ্রই কোণঠাসা হয়ে পড়লে আজাদ হিন্দ বাহিনী জাপানের সহযোগিতা লাভে বঞ্চিত হয়। ফলে অস্ত্র ও রসদের অভাবে আজাদ হিন্দ বাহিনীর বহু সেনা বিপর্যস্ত হয়ে ব্রিটিশদের হাতে বন্দি হয়।
3. বিচার : 1945 খ্রিস্টাব্দে দিল্লির লালকেল্লায় বন্দি আজাদি সেনাদের বিচার শুরু হলে এর প্রতিবাদে সারা ভারত উত্তাল হয়ে ওঠে। 11 নভেম্বর আজাদ হিন্দ সপ্তাহ এবং 12 নভেম্বর আজাদ হিন্দ দিবস হিসেবে পালিত হয়।
4. রশিদ আলির সাজা : বন্দি আজাদি সেনাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ক্যাপটেন রশিদ আলি। বিচারে তাঁর 7 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়।
5. আন্দোলনের প্রসার : ধর্মঘটী ছাত্রদের মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে কলকাতা ও নিকটবর্তী শিল্পাঞ্চলগুলিতেও ধর্মঘট ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছোয় যে, কলকাতার ব্রিটিশ প্রশাসন কার্যত ভেঙে পড়ে। কয়েকদিনের সংঘর্ষে কলকাতায় অন্তত 200 জনের মৃত্যু হয়।
মূল্যায়ন : রসিদ আলি দিবসের আন্দোলনের চাপে শেষপর্যন্ত সীমান্তের গভর্নর কানিংহাম প্রধান সেনাপতিকে সব বিচার বাতিল করার পরামর্শ দেন। ড.অমলেশ ত্রিপাঠি এই আন্দোলনের স্বরূপ বিশ্লেষণ করার পরিপ্রেক্ষিতে লিখেছেন যে “ মৃত সুভাষ জীবিত সুভাষের থেকে ঢের বেশি শক্তিশালী প্রতিপন্ন হয়েছিল। ”
আরও পড়ুন : |