বিপ্লবী আন্দোলনের অন্যতম নারী ছিল প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। এখানে বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের অবদান সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের অবদান :
ভূমিকা : আদর্শবোধ ও আত্মোৎসর্গের মাধ্যমে যারা নিজেদের জীবনকে অর্থবহ করে তুলেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম নারী বিপ্লবী ছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার।
1. বিপ্লবী আন্দোলনে আগ্রহ : প্রীতিলতা ছাত্রাবস্থায় ঢাকার দীপালি সংঘে এবং পরে কলকাতায় ছাত্রী সংঘে যোগ দিয়ে লাঠিখেলা, ছোরাখেলা প্রভৃতিতে পারদর্শী হয়ে ওঠে। তখন থেকেই বিপ্লবী আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে আগ্রহী হন। এই আগ্রহ থেকে তিনি সূর্য সেনের বিপ্লবী দলে যোগ দিয়ে ফুলতার ছদ্মনাম গ্রহণ করেন।
2. ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ : প্রীতিলতার সহযোগীতায় শান্তি চক্রবর্তী, কালিকিঙ্কর দে প্রমুখ 1932 খ্রিস্টাব্দের 24 শে সেপ্টেম্বর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চট্টগ্রামের পাহাড়তলির ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ করেন। পুলিশ পালটা আক্রমণ চালালে উভয় পক্ষের সম্মুখ যুদ্ধ হয়।
3. চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন : মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের ঘটনায় প্রীতিলতা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন দ্বতা করেন। এরপর তিনি টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন অফিস ধ্বংস, পুলিশ জানা লাইন দখল, জালালাবাদ পাহাড়ের যুদ্ধ, ধলঘাটের যুদ্ধ প্রভৃতি কার্যকলাপে অংশ নেন।
4. চিরবিদায় : পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে প্রীতিলতা পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। এভাবে দেশমাতার মুক্তিযুদ্ধে নিবেদিতপ্রাণ প্রীতিলতা ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।
মূল্যায়ন : প্রীতিলতাকে তাঁর মা আদর করে ডাকতেন ‘ রানি ’ বলে। প্রীতিলতার মৃত্যুর প্রসঙ্গে কল্পনা দত্ত লিখেছেন- “ প্রীতির বাবা শোকে দুঃখে পাগলের মত হয়ে গেলেন, কিন্তু প্রীতির মা গর্ব করে বলতেন, ‘ আমার মেয়ে দেশের কাজে প্রাণ দিয়েছে। ” পরিবারের চরম আর্থিক দুর্দশায় ধাত্রীর কাজ করে সংসার চালিয়েও প্রীতিলতার মায়ের এই গর্বটুকু বড়োই বীরত্বপূর্ণ।