বিপ্লবী আন্দোলনে কল্পনা দত্তের অবদান ছিল অসামান্য, আজকে আমরা আলোচনা করবো বিপ্লবী আন্দোলনে কল্পনা দত্তের অবদান সম্পর্কে।
বিপ্লবী আন্দোলনে কল্পনা দত্তের অবদান :
ভূমিকা : বিংশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলার যে সকল নারী ব্রিটিশ – বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বিপ্লবী নারী ছিলেন কল্পনা দত্ত।
1. আন্দোলনে যোগদান : কলকাতার বেথুন কলেজে পড়ার সময়ই তিনি বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু ও কানাইলাল দত্তের বিপ্লবী ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হন। এই সময় তিনি কল্যাণী দাস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ছাত্রী সংঘে যোগ দেন এবং বিক্ষোভ, হরতাল প্রভৃতি আন্দোলনে অংশ
নেন।
2. বিস্ফোরক আমদানি : কল্পনা কলকাতা থেকে গোপনভাবে বিস্ফোরক এনে তা দিয়ে গান কটন তৈরি করেন এবং এর সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জেলবন্দি বিপ্লবী গণেশ ঘোষ, অনন্ত সিং, লোকনাথ বল প্রমুখকে পালাতে সহায়তা করার চেষ্টা করেন।
3. সূর্য সেনের দলে যোগদান : কল্পনা চট্টগ্রামে ফিরে পূর্ণেন্দু দস্তিদারের মাধ্যমে বিপ্লবী সূর্য সেনের সঙ্গে পরিচিত হন। এরপর তিনি সূর্য সেন প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি – র চট্টগ্রাম শাখায় যোগ দেন।
4. ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণের পরিকল্পনা : সূর্য সেন প্রীতিলতার সঙ্গে কল্পনাকেও চট্টগ্রামে ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণের দায়িত্ব দেন। কিন্তু আক্রমণের এক সপ্তাহ আগে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
5. কারাদণ্ড : তিন মাস পর গৈরালা গ্রামের পুলিশের সঙ্গে অন্য একটি সংঘর্ষের সময় কল্পনার পিস্তলের গুলি ফুরিয়ে গেলে তিনি ধরা পড়ে যায়। বিচারে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে কল্পনার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
6. গৈরালা গ্রামে সংঘর্ষ : জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর কল্পনা ও তাঁর কয়েকজন সঙ্গী পুলিশের সঙ্গে গৈরালা গ্রামে গুলির লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষের পর সূর্য সেন ধরা পড়লেও কল্পনা দত্ত পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
মূল্যায়ন : সবশেষে কল্পনা কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই থেমে যায়নি । 1939 খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পেয়ে কমিউনিস্ট পার্টি – তে যোগ দিয়ে কল্পনা ব্রিটিশ – বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যান । তিনি 1995 খ্রিস্টাব্দে দিল্লিতে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।