ট‍্যাক্সোনমি কাকে বলে ? ট‍্যাক্সোনমির প্রকারভেদ

ট‍্যাক্সোনমি কাকে বলে ? ট‍্যাক্সোনমির প্রকারভেদ

ট্যাক্সোনমি ও সিস্টেমেটিক্স-এই দুটি শব্দের অর্থ ও প্রয়োগ সম্পর্কে মতপার্থক্য আছে। ট্যাক্সোনমি প্রধানত জীবের শ্রেণিবিন্যাস প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। তবে বিজ্ঞানী ল্যরেন্স-এর মত অনুসারে ট্যাক্সোনমি বিষয়টিতে জীবের শনাক্তকরণ, শ্রেণিবদ্ধকরণ ও নামকরণ তিনটি প্রক্রিয়াই জড়িত। শনাক্তকরণ ও নামকরণ ছাড়া শ্রেণিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়াটি সম্ভব নয়। তাই এই সমস্ত পদ্ধতিগুলিই ট্যাক্সোনমি বিষয়টির অন্তর্ভুক্ত।

◆ ট‍্যাক্সোনমি কাকে বলে :

জীব বিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের নামকরণ, শনাক্তকরণ ও শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি আলোচনা করা হয়, তাকে ট্যাক্সোনমি বা বিন্যাসবিধি বলে।

বিজ্ঞানী Simpson 1961, ট্যাক্সোনমির যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা হল- “শ্রেণিবিন্যাসের নিয়ম, রীতিনীতি ও পদ্ধতিসহ তাত্ত্বিক জ্ঞানই হল ট্যাক্সোনমি।”

বিজ্ঞানী Mayr 1969 সালে ট্যাক্সোনমির যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা হল-“শ্রেণিবিন্যাসের তত্ত্ব ও ব্যবহারকেই বলে ট্যাক্সোনমি।”

◆ ট্যাক্সোনমির প্রকারভেদ :

ট‍্যাক্সোনমি বা বিন্যাসবিধি বিভিন্ন প্রকারের হয়, সেগুলি নীচে আলোচনা করা হল-

1. ক্যারিওট্যাক্সোনমি : নিউক্লিয়াস ও ক্রোমোজোমের উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে এই শ্রেণিবিন্যাস করা হয়।

2. কেমোট্যাক্সোনমি : জীবের জৈব রাসায়নিক উপাদান যেমন- অ্যামাইনো অ্যাসিড, DNA, অ্যালকালয়েড, বিভিন্ন বিপাকজাত বস্তুর ও রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে জীবের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়।

3. সাইটোট্যাক্সোনমি : কোশীয় গঠন, কোশীয় উপাদান, ক্রোমোজোমের প্রকৃতি ও সংখ্যা এবং কোশ বিভাজন-এর ওপর ভিত্তি করে জীবের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়।

4. নিউম্যারিক্যাল ট্যাক্সোনমি : জীবের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য ছাড়া অন্যান্য সমস্ত বৈশিষ্ট্যগুলিকে গাণিতিক পরিভাষায় রূপান্তর ঘটিয়ে সাদৃশ্য নির্ধারণের মাধ্যমে জীবের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। কম্পিউটার ও গণিতের সাহায্য নিয়ে শ্রেণিবিন্যাসকরণ করা হয় বলে একে ম্যাথমেটিক্যাল ট্যাক্সোনমি বলে।

5. আলফা ট্যাক্সোনোমি : কেবলমাত্র বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে জীবেদের শনাক্তকরণ ও শ্রেণিবিন্যাস করার নীতিকে আলফা
ট্যাক্সোনোমি বলে।

6. এক্সপেরিমেন্টাল ট্যাক্সোনমি : বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এই শ্রেণিব্যিনাস করা হয়। যেমন বিবর্তনগত পরিবর্তন, তুলনামূলক গঠন ইত্যাদির মাধ্যমে জীবের প্রজাতি সমূহের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ধারণ করা হয়।

7. বিটা ট্যাক্সোনোমি : বাহ্যিক, শারীরস্থানিক, কোশবিদ্যা সম্পর্কিত, রেণুবিদ্যা, শারীরবৃত্তীয় ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে জীবদের শনাক্তকরণ ও শ্রেণিবিন্যাস করার নীতিকে বিটা ট্যাক্সোনোমি বলে আলফা ও বিটা ট্যাক্সোনোমি শব্দগুলি বিজ্ঞানী টুরিল প্রবর্তন করেন।

8. ওমেগা ট্যাক্সোনোমি : সংগৃহীত সকল প্রকার তথ্যের বিশ্লেষণ, সংশ্লেষ ও অভিব্যক্তিমূলক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিন্যাসের মান উন্নত করার নীতিকে ওমেগা ট্যাক্সোনোমি বলে।

9. গামা ট্যাক্সোনোমি : জীবদের বিশদ বর্ণনা, পারস্পরিক সম্পর্ক ও অভিব্যক্তির ভিত্তিতে শ্রেণিবিন্যাস করার নীতিকে গামা ট্যাক্সোনোমি বলে।

আরও পড়ুন :

জীববৈচিত্র্য কাকে বলে ? শ্রেণীবিভাগ 

জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব 

Leave a Comment